বিস্তারিত বীরভূম জেলা

জিকে পোস্ট নাম্বার - ২৪০ 

ছবি - শান্তিনিকেতনে সস্ত্রীক গান্ধীজী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

বীরভূম জেলা হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত বর্ধমান বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি বর্ধমান বিভাগের উত্তর প্রান্তের শেষ জেলা। এই জেলার সদর শহর সিউড়ি।বীরভূম জেলার পশ্চিম সীমান্তে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের জামতাড়া, দুমকা ও পাকুর জেলা তিনটি অবস্থিত। অন্য তিন দিকে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ জেলা অবস্থিত।
বীরভূম জেলাকে বলা হয় ‘লালমাটির জেলা’ বা ‘রাঙামাটির জেলা’।  এই জেলা তার ভূ-সংস্থান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য প্রসিদ্ধ। এই দুই ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলার তুলনায় বীরভূম জেলার অবস্থান স্বতন্ত্র। এই জেলার পশ্চিম দিকটি জঙ্গলাকীর্ণ। এই অঞ্চলটি ছোটোনাগপুর মালভূমির অংশ। এই অঞ্চলটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকের উর্বর পলিগঠিত কৃষিজমির দিকে নেমে এসেছে।  বীরভূম জেলা অতীতে একাধিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছে। বীরভূমের শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।  এই জেলায় একাধিক উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক মেলা ও উৎসব আয়োজিত হয়। শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা তার মধ্যে অন্যতম।
বীরভূম একটি কৃষিপ্রধান জেলা। এই জেলার ৭৫% মানুষ কৃষিজীবী।  এই জেলার প্রধান শিল্পগুলি হল সূতি ও রেশম উৎপাদন ও তাঁত বয়ন, চাল ও তৈলবীজ কল, লাক্ষা উৎপাদন, পাথর খাদান এবং ধাতু ও মৃৎপাত্র উৎপাদন। বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এই জেলার একমাত্র বৃহৎ শিল্প।
নাম-ব্যুৎপত্তি 
‘বীরভূম’ নামটি সম্ভবত ‘বীর’ ও ‘ভূমি’ শব্দদ্বয় থেকে এসেছে।  অন্য একটি মতে, এই জেলার নামকরণ করা হয়েছে এখানকার পূর্বতন শাসক বীর রাজবংশের নামানুসারে।  কিন্তু সাঁওতালি ভাষায় ‘বীর’ শব্দের অর্থ বন। সেই অর্থে ‘বীরভূম’ শব্দের অর্থ বনভূমি।
ভূগোল 
কর্কটক্রান্তি রেখার উপর ২৩° ৩২' ৩০" ও ২৪° ৩৫' ০" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭° ৫' ৪৫" ও ৮৮° ১' ৪০" পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত বীরভূম জেলার মোট আয়তন ৪৫৪৫ বর্গকিলোমিটার। ত্রিকোণাকার এই জেলার নিম্নস্থ বাহুটি সৃজন করেছে অজয় নদ এবং এর শীর্ষবিন্দু স্থাপিত হয়েছে উত্তরে। উক্ত নদ বর্ধমান ও বীরভূম জেলার সীমানাও নির্ধারণ করেছে। ঝাড়খণ্ড রাজ্য জেলার পশ্চিম ও উত্তর সীমান্ত বরাবর প্রসারিত। পূর্বদিকে অবস্থিত মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমান জেলার কিয়দংশ।  ভৌগোলিক বিচারে এই অঞ্চল ছোটোনাগপুর মালভূমির উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত; যার ঢাল পূর্বদিকে ক্রমশ নেমে এসে পললসমৃদ্ধ গাঙ্গেয় সমতলভূমিতে এসে মিশেছে।

মামা ভাগ্নে পাহাড়
বীরভূম জেলার পশ্চিমাংশ অতীতে বজ্জভূমি বা বজ্রভূমি নামে পরিচিত ছিল।  এই অঞ্চলটি ছিল এক ঊষর তরঙ্গায়িত উচ্চভূমি। কিন্তু জেলার পূর্বাংশ অপেক্ষাকৃত উর্বরতর। রাঢ় অঞ্চলের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই অংশটিই গাঙ্গেয় সমভূমিতে বিলীন হয়েছে। রাঢ়ের একটি অংশও বজ্জভূমির অন্তর্গত ছিল; অবশিষ্ট রাঢ়কে বজ্জভূমি থেকে পৃথক করার উদ্দেশ্যে সুহ্ম নামে অভিহিত করা হত।  বীরভূম জেলার একমাত্র পাহাড়, মামা ভাগ্নে পাহাড় দুবরাজপুর শহরের সন্নিকটে অবস্থিত। বর্তমানে এটি একটি সুপরিচিত পর্যটন স্থল।
জলবায়ু 
জেলার পশ্চিমাংশের জলবায়ু শুষ্ক ও চরম প্রকৃতির; পূর্বাংশের জলবায়ু অবশ্য অপেক্ষাকৃত মৃদু। গ্রীষ্মে তাপমাত্রার পারদ ৪০º সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়ে যায়; আবার শীতকালে ১০º সেন্টিগ্রেডের নিচে নেমে আসে।  লক্ষ্য করা গেছে যে পশ্চিমাংশের বৃষ্টিপাত পূর্বাংশের তুলনায় অধিক। বর্ষাকালে (জুন-সেপ্টেম্বর) রাজনগর ও নানুরে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যথাক্রমে ১৪০৫ মিলিমিটার ও ১২১২ মিলিমিটার।
নদনদী 
বীরভূম জেলায় অসংখ্য নদনদী প্রবাহিত হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অজয়, ময়ূরাক্ষী (মোর), কোপাই, বক্রেশ্বর, ব্রাহ্মণী, দ্বারকা, হিংলো, চপলা, বাঁশলই, পাগলা ইত্যাদি।  সিউড়ির নিকট ময়ূরাক্ষীতে তিলপাড়া বাঁধ নামক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার ২৪২৮ বর্গকিলোমিটার অঞ্চলে জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে।  জেলার প্রায় সমস্ত নদীই ছোটোনাগপুর মালভূমিতে উৎপন্ন ও পূর্ববাহিনী। বর্ষাকালে এইসব নদীতে জলস্ফীতি ভয়ংকর আকার নেয়; কিন্তু গ্রীষ্মের শুষ্ক মাসগুলিতে এরা সংকুচিত হয়ে যায়। খরা ও বন্যার চক্রাকার আবর্তন শুধুমাত্র জীবন ও সম্পত্তি হানির কারণই হয় না, বরং তা জেলাবাসীর জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ কষ্টের মধ্যে ঠেলে দেয়।
ইতিহাস 
প্রাগৈতিহাসিক ও প্রাচীন যুগ  
রামকিঙ্কর বেইজ নির্মিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভাস্কর্য, আমার কুটির
বর্তমানে বীরভূম নামে পরিচিত অঞ্চলটি প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই জনবসতিপূর্ণ। আউসগ্রামের পাণ্ডুরাজার ঢিবি সম্পর্কিত কয়েকটি তাম্রপ্রস্তরযুগীয় প্রত্নস্থল এই জেলায় অবস্থিত।  জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রস্তরযুগের নানা নিদর্শনও পাওয়া গেছে।
আচারাঙ্গ সূত্র নামক একটি প্রাচীন জৈন ধর্মগ্রন্থের বিবরণী অনুযায়ী, সর্বশেষ (২৪তম) তীর্থঙ্কর মহাবীর ভ্রমণ করতে করতে এই অঞ্চলে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। উক্ত গ্রন্থে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের এই অঞ্চল বজ্জভূমি ও সুব্বভূমি (সম্ভবত সুহ্ম) অঞ্চলে স্থিত লাঢ়ার পথহীন দেশ নামে চিহ্নিত হয়েছে।  কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে রাঢ় অঞ্চলে বৌদ্ধ ও জৈনধর্মের প্রচার ছিল এই অঞ্চলের আর্যীকরণের একটি অঙ্গ।দিব্যাবদান নামক একটি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের ভিত্তিতে ডক্টর অতুল সুর দেখিয়েছেন যে গৌতম বুদ্ধ এই অঞ্চলের উপর দিয়েই ভ্রমণ করে পুণ্ড্রবর্দ্ধন ও সমতট অঞ্চলে যান।
রাঢ় অঞ্চল কোনো এক সময় মৌর্য সাম্রাজ্যের অঙ্গীভূত হয়। পরবর্তীকালে এই অঞ্চল গুপ্ত সাম্রাজ্য, শশাঙ্ক ও হর্ষবর্ধনের সাম্রাজ্যভুক্তও হয়েছিল। হর্ষবর্ধনের সাম্রাজ্যের পতনের পর খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত পাল রাজারা এই অঞ্চল শাসন করেন। তারপর এই অঞ্চলের শাসনভার সেন রাজাদের হস্তগত হয়।  পালযুগে বৌদ্ধধর্ম, বিশেষত মহাযান বৌদ্ধধর্ম, এই অঞ্চলে বিকশিত হয়ে উঠেছিল।  খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে চিনা পর্যটক হিউয়েন সাং তাঁর ভ্রমণ-বিবরণীতে এই অঞ্চলে তাঁর দেখা কয়েকটি মঠের বর্ণনা দিয়েছেন।
মধ্যযুগ 
খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে এই অঞ্চলে মুসলমান শাসন স্থাপিত হয়। যদিও জেলার পশ্চিমাংশে এই শাসনের প্রভাব ছিল অল্প। এই অঞ্চল মূলত বীর রাজবংশ নামে পরিচিত স্থানীয় হিন্দু শাসনকর্তাদের দ্বারা শাসিত হত।  তাঁদের শাসনের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায় হেতমপুর, বীরসিংপুর ও রাজনগর শহরে।.  তবাকৎ-ই-নাসিরি গ্রন্থকার মিনহাজ-ই-সিরাজ লখনুরকে রাঢ়ের একটি থানাহ্, মুসলমান শাসনের একটি শাখা ও একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তচৌকি বলে উল্লেখ করেন। লখনুরের সঠিক অবস্থান জানা না গেলেও মনে করা হয় এটি বর্তমান বীরভূম ভূখণ্ডেরই অন্তর্গত ছিল।
পৌরাণিক বিবরণ অনুযায়ী বজ্জভূমির (পশ্চিম বীরভূম) অরণ্যাঞ্চল হিন্দু ও তান্ত্রিক ক্রিয়াকলাপের পীঠভূমি।  ঐতিহাসিক ডক্টর অতুল সুরের মতে, বজ্জভূমির জনবসতিবিরল জঙ্গলগুলি নির্জনতার কারণেই ধর্মীয় আচারানুষ্ঠান পালনের আদর্শ স্থানে পরিণত হয়।  কোনো কোনো গ্রন্থকার বীরভূমকে তান্ত্রিক পরিপ্রেক্ষিতে কামকোটী নামে অভিহিত করেছেন। বজ্রযান, শাক্ত ও বৌদ্ধ তান্ত্রিকরা তন্ত্রসাধনার উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলে বহু মন্দির নির্মাণ করেন। বীরভূমে অনেকগুলি শক্তিপীঠ অবস্থিত। এগুলি হল তারাপীঠ, বক্রেশ্বর, কঙ্কালীতলা, ফুল্লরা (লাভপুরের নিকট), সাঁইথিয়া ও নলহাটি। তারাপীঠের অন্যতম প্রসিদ্ধ শক্তিউপাসক ছিলেন বামদেব, যিনি বামাখ্যাপা নামে সমধিক পরিচিত।
আধুনিক যুগ 
১৭৮৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে বীরভূম নামক প্রশাসনিক জেলাটির জন্ম হয়। তার আগে এটি মুর্শিদাবাদ জেলার অংশ ছিল। ১৭৮৭ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত "District Beerbhoom" ছিল বর্তমান বীরভূমের তুলনায় আকারে অনেক বড়ো একটি জেলা। ১৭৯৩ সাল পর্যন্ত "Bishenpore" (বর্তমানে বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া জেলা) এই জেলার অন্তর্গত ছিল। ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহের আগে পর্যন্ত সাঁওতাল পরগনাও এই জেলার অন্তর্গত ছিল। অর্থাৎ, সেই সময় পশ্চিমে এই জেলার বিস্তৃতি ছিল দেওঘর পর্যন্ত। ১৮৫৫-৫৬ সালে অবিভক্ত বীরভূমের পশ্চিমাঞ্চলে সংগঠিত সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণে এই আদিবাসী-অধ্যুষিত পশ্চিমাঞ্চলটিকে জেলা থেকে বাদ দেওয়ার আশু প্রয়োজন অনুভূত হয়। তাই বিদ্রোহ দমনের পর কর্তৃপক্ষ জেলাটিকেও ভাগ করে দেন। আজও বীরভূমে এই বিদ্রোহের দুই নায়ক সিধু ও কানুকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
অর্থনীতি 

বীরভূম মূলগতভাবে একটি কৃষিনির্ভর জেলা। এই জেলার অধিবাসীদের ৭৫ শতাংশই কৃষিকাজের সঙ্গে নিযুক্ত।  বীরভূমের বনভূমির মোট আয়তন ১৫৯.৩ বর্গকিলোমিটার এবং ৩৩২৯.০৫ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।  মোট জনসংখ্যার ৯১.০২ শতাংশ বাস করে গ্রামাঞ্চলে।  জেলায় উৎপন্ন খাদ্যফসলগুলির মধ্যে চাল, শুঁটি, গম, ভুট্টা, আলু ও আখ উল্লেখযোগ্য।  জেলায় তেরোটি হিমঘর আছে। ২০০১-০২ সালের হিসেব অনুযায়ী বীরভূমের মোট সেচসেবিত অঞ্চল ২৭৬৩.৯ বর্গকিলোমিটার।  সেচ পরিষেবা সুনিশ্চিত করার জন্য সমগ্র জেলায় পাঁচটি বাঁধ গড়ে তোলা হয়েছে। ময়ূরাক্ষী নদীর উপর ম্যাসাঞ্জোরের কানাডা বাঁধ বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমানার খুব কাছে ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় অবস্থিত। ময়ূরাক্ষীর ভাটিতে তিলপাড়া বাঁধটি জেলাসদর সিউড়ির কাছে অবস্থিত।
বীরভূম কুটিরশিল্পের একটি বিশিষ্ট কেন্দ্র। সম্ভবত জেলার সর্বাধিক খ্যাতনামা কুটিরশিল্পকেন্দ্রটি হল আমার কুটির নামক এক অলাভজনক গ্রামীণ সংস্থা। বীরভূমের অন্যতম প্রধান শিল্পগুলি হল কৃষিভিত্তিক শিল্পসমূহ, বস্ত্রবয়ন, কাষ্ঠশিল্প ও চারুশিল্পকলা। শ্রীনিকেতন তার দুগ্ধ ও কাষ্ঠশিল্পের জন্য বিখ্যাত। বস্ত্রবয়ন শিল্প বীরভূমের একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য কুটিরশিল্প। বিশেষত সূতি, স্থানীয় কৃষিজ তসর সিল্ক, পাটের কাজ, বাটিক, কাঁথাস্টিচ, ম্যাকরেম (গিঁটযুক্ত সুতোর কাজ), চামড়া, মৃৎশিল্প ও টেরাকোটা, শোলাশিল্প, কাঠখোদাই, বাঁশশিল্প, ধাতুশিল্প ও বিভিন্ন আদিবাসী শিল্পকলা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।  জেলায় মোট ৮,৮৮৩টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প রয়েছে। প্রধান প্রধান শিল্পগুলি হল সূতি ও রেশমচাষ ও বয়নশিল্প, চাল ও তৈলবীজ মিল, লাক্ষাচাষ, ধাতু ও মৃৎশিল্প।  বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (২১০ মেগাওয়াট x ৩ + নির্মীয়মান ২১০ মেগাওয়াট X ২) জেলার একমাত্র বৃহৎ শিল্প।
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিভাগ 
বীরভূম জেলা তিনটি মহকুমায় বিভক্ত: সিউড়ি সদর, বোলপুর ও রামপুরহাট।  সিউড়ি বীরভূমের জেলাসদর। জেলায় মোট ২৩টি থানা, ১৯টি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, ৬টি পুরসভা ও ১৬৯টি গ্রামপঞ্চায়েত রয়েছে।  পুরসভা এলাকা ছাড়াও প্রত্যেকটি মহকুমা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে বিভক্ত; যেগুলি আবার গ্রামীণ অঞ্চল ও সেন্সাস টাউনে বিভক্ত। সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলে সাতটি নগরাঞ্চল দেখা যায়: ছয়টি পুরসভা ও একটি সেন্সাস টাউন।  ২০০০ সালে পৌরসভার মর্যাদা পাওয়া নলহাটি এই জেলার সাম্প্রতিকতম শহর।
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত বীরভূম জেলা ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রে বিভক্ত ছিল।:  নানুর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৩), বোলপুর(বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৪), লাভপুর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৫), দুবরাজপুর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৬), রাজনগর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৭), সিউড়ি (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৮), মহম্মদবাজার (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৯), ময়ূরেশ্বর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯০), রামপুরহাট (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯১), হাঁসন (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯২), নলহাটি (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯৩) ও মুরারই (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯৪)। নানুর, রাজনগর, ময়ূরেশ্বর ও হাঁসন কেন্দ্রগুলি তফসিলি জাতির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।  উক্ত নির্বাচনটি পশ্চিমবঙ্গে সংসদীয় ক্ষেত্রগুলির সীমানা পুনর্নিধারণের আগে অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ও তার পরবর্তী সময়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলির ক্ষেত্রে সীমানা নির্ধারণ কমিশনের সিদ্ধান্ত বলবৎ হয়েছিল।  ভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০০৯ নবগঠিত সংসদীয় ক্ষেত্রগুলির ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়। নবগঠিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালে।

কেন্দুবিল্বর টেরাকোটা
সীমানা নির্ধারণ কমিটির সুপারিশ অনুসারে এই জেলাকে বর্তমানে ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রে বিভক্ত করা হয়েছে:  দুবরাজপুর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৪), সিউড়ি (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৫), বোলপুর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৬), নানুর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৭), লাভপুর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৮), সাঁইথিয়া(বিধানসভা কেন্দ্র #২৮৯), ময়ূরেশ্বর (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯০), রামপুরহাট (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯১), হাঁসন (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯২), নলহাটি (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯৩) ও মুরারই (বিধানসভা কেন্দ্র #২৯৪)। দুবরাজপুর, নানুর ও সাঁইথিয়া তফসিলি জাতি প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।  পূর্বতন রাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রটি বিলুপ্ত হয়েছে।
দুবরাজপুর, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট, হাঁসন, নলহাটি ও মুরারই বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের অংশ।  বিশিষ্ট চলচ্চিত্রাভিনেত্রী শতাব্দী রায় ২০০৯ সালে এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভারতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে বোলপুর, নানুর, লাভপুর ও সাঁইথিয়া বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রেরঅন্তর্গত। বর্ধমান জেলার তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রও এই সংসদীয় কেন্দ্রের অন্তর্গত।  লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দীর্ঘকালের সাংসদ ছিলেন।
পরিবহণ 
পানাগড়-মোরগ্রাম সড়ক এই জেলার উপর দিয়ে প্রসারিত। সকল গ্রাম ও শহর সড়কপথের দ্বারা সংযুক্ত। জেলার মোট পাকা সড়কপথের দৈর্ঘ্য ২৪১৩ কিলোমিটার ও কাঁচা রাস্তার দৈর্ঘ্য ৪৬৭৪ কিলোমিটার। এর বিপরীতে জেলার মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য ২০১.৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে রয়েছে ২৬.৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ আহমেদপুর-কাটোয়া ন্যারো গেজ ট্র্যাক, যার সূচনা ঘটে ১৯১৭ সালে।  ১৮৬২ সালে স্থাপিত পূর্ব রেলের হাওড়া-সাহিবগঞ্জ লুপ লাইনটিও এই জেলার উপর দিয়ে প্রসারিত। নলহাটি জংশনের মাধ্যমে মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করা হয়। অন্ডাল-সাঁইথিয়া লাইনটি অন্ডালে হাওড়া-দিল্লি মেন লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

জনপরিসংখ্যান 
১৯০১ সালে বীরভূমের জনসংখ্যা ছিল ৯০২,২৮০। ১৯৮১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২,০৯৫,৮২৯। ২০০১ সালের জনগণনা তথ্য অনুসারে এই জনসংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,০১৫,৪২২। নিম্নোল্লিখিত সারণিতে জেলার জনপরিসংখ্যান সংক্রান্ত তথ্য প্রদত্ত হল:
গ্রাম/শহর
জনসংখ্যা
পুরুষ
মহিলা
মোট
৩,০১৫,৪২২
১,৫৪৬,৬৩৩
১,৪৬৮,৭৮৯
গ্রাম
২,৭৫৭,০০২
১,৪১৪,০৯৭
১,৩৪২,৯০৫
শহর
২৫৮,৪২০
১৩২,৫৩৬
১২৫,৮৮৪
২০০১ সালের জনগণনা তথ্য অনুসারে জেলার মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ হিন্দু। অবশিষ্ট (৩৩.০৬ শতাংশ) মূলত মুসলমান।.  অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা জনসংখ্যার মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। ২০০১ সালের জনগণনা তথ্য অনুযায়ী, মোট জনসংখ্যার ২৯.৫ শতাংশ তফসিলি জাতি ও ৬.৭ শতাংশ তফসিলি উপজাতি।  বাঙালিরা ছাড়াও সাঁওতাল ও আরও দশটি উপজাতি এই জেলায় বাস করে। এদের মধ্যে কোড়া, মহালি ও ওঁরাও উল্লেখযোগ্য। এখানকার বাঙালিরা বাংলার স্থানীয় উপভাষায় কথা বলেন।
সংস্কৃতি 
বীরভূমের বাউলদের দর্শন ও সঙ্গীত জেলার লোকসংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও বীরভূমে অনেক কবিয়াল, কীর্তনীয়া ও অন্যান্য লোকসংস্কৃতি গোষ্ঠীর বসবাস।বীরভূমে অসংখ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা। পৌষ মাসে আরম্ভ হয়ে এই মেলাগুলি মকর সংক্রান্তি পর্যন্ত চলে। জয়দেব কেন্দুলির মেলা অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হয়।  এই মরশুমে বিভিন্ন উৎসবও পালিত হয়। বীরভূমের মানুষ যাত্রা, কবিগান ও আলকাপের মতো লোকবিনোদন অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেন।

শান্তিনিকেতনে বাউলের দল
বীরভূমে অনেক কবির জন্ম হয়; তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জয়দেব, চণ্ডীদাস ও জ্ঞানদাস।  বৈষ্ণব, শাক্ত ও শৈবধর্মের ত্রিবেণীসংগম বীরভূমের গ্রামগুলিতে নানান গ্রামদেবতা পূজার প্রাগৈতিহাসিক প্রথা আজও বিদ্যমান।
বীরভূমের প্রধান দ্রষ্টব্যস্থলগুলির মধ্যে অন্যতম বক্রেশ্বর, তারাপীঠ ও পাথরচাপুরি। জয়দেব কেন্দুলি, সুরুল ও নানুরের পুরনো মন্দিরগুলি তাদের টেরাকোটা (পোড়ামাটি) ভাস্কর্যের জন্য বিখ্যাত।

ব্যক্তিত্ব 
বীরভূমে, বিশেষত শান্তিনিকেতনে অনেক বিশিষ্ট মানুষ জন্মগ্রহণ অথবা কর্মজীবন অতিবাহিত করেছেন।  নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই জেলাকে তাঁর বাসস্থানে পরিণত করেন। এখানেই তিনি তাঁর প্রসিদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র বিশ্বভারতীরস্থাপনা করেন। অজয় নদের তীরে জয়দেব কেন্দুলিতে দ্বাদশ শতাব্দীর বিশিষ্ট সংস্কৃত কবি জয়দেবজন্মগ্রহণ করেছিলেন।  নানুরে জন্মগ্রহণ করেন চতুর্দশ শতাব্দীর বিশিষ্ট কবি পদাবলিকার চণ্ডীদাস।  বৈষ্ণবধর্মের প্রতিষ্ঠাতা চৈতন্য মহাপ্রভুর প্রধান পার্ষদ নিত্যানন্দ স্বামী (বিখ্যাত গৌর-নিতাই যুগলের নিতাই) জন্মগ্রহণ করেন এই জেলার একচক্রা গ্রামে।  আধুনিক বাংলা সাহিত্যের স্বনামধন্য কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়(১৮৯৮ – ১৯৭১) এই জেলার লাভপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর রচনায় বীরভূমের গণজীবনের অনেক চিত্র পাওয়া যায়।
উদ্ভিদ ও প্রাণী 
বীরভূম জেলার পূর্বাংশ পশ্চিমবঙ্গের ধান-উৎপাদক অঞ্চলের অন্তর্গত। তাই এই অঞ্চলের উদ্ভিদপ্রকৃতি বাংলার ধান-উৎপাদক অঞ্চলের উদ্ভিদপ্রকৃতির মতোই। অ্যাপোনোগেটন, আল্ট্রিকুলেরিয়া, ড্রসেরা, ফিলকক্সিয়া, স্ক্রোফালারিয়াসি বা সমজাতীয় জলজ অথবা পালাস্ট্রিন প্রজাতির উদ্ভিজ্জ এখানে চোখে পড়ে।  পশ্চিমের শুষ্ক অংশে দেখা যায় ওয়েন্ডল্যান্ডিয়া, কনভলভেলাসি, স্ট্রিপা, ট্র্যাগাস, স্পেরম্যাকোসি, জিজিফাস, ক্যাপারিস এবং ল্যাটেরাইট মৃত্তিকায় জাত অন্যান্য উদ্ভিজ্জ।  আম, তাল ও বাঁশ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।  অন্যান্য গাছের মধ্যে কাঁঠাল, অর্জুন, শাল, পেয়ারা, কেন্দ ও মহুয়া গাছ চোখে পড়ে।
বুনো কুকুর ও গৃহপালিত পশু ছাড়া যে স্তন্যপায়ীর দেখা সবচেয়ে বেশি মেলে সেটি হল হনুমান। চিনপাই, বান্দারসোল ও চারিচার বনাঞ্চলে বুনো শুয়োর ও নেকড়ের দেখাও মেলে।  তবে এই অঞ্চলে আর কোথাও চিতাবাঘ বা ভাল্লুকের দেখা মেলে না।  মহুয়া গাছে ফুল ফোটার মরশুমে ঝাড়খণ্ড থেকে হাতির পাল নেমে এসে শস্য নষ্ট করে এবং জীবন ও সম্পত্তিহানির কারণ হয়।  বীরভূমে পার্বত্য ও সমতলীয় উভয়প্রকার পাখিই দেখা যায়: তিতির, পায়রা, সবুজ পায়রা, জলকুক্কুট, দোয়েল, ফিঙে, বাজ, কোকিল, তোতা ইত্যাদি এবং নানা পরিযায়ী পাখি দেখা যায়।
বীরভূম জেলার শিক্ষাব্যবস্থা: 
মাধ্যমিক বিদ্যালয়–২৫৬, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় –১১০
জুনিয়র হাই স্কুল–৮৬
জুনিয়র হাই মাদ্রাসা–১০
সিনিয়র মাদ্রাসা–৪
প্রাথমিক বিদ্যালয়–২৩৭
শিশু শিক্ষা কেন্দ্র–৪৫৯
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র–২৪০৭
কলেজ–১২
বিশ্ববিদ্যালয়–১
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ–২
পলিটেকনিক –১
শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান –১
১৯৭৭ সালে শান্তিনিকতনের নিকটস্থ বল্লভপুর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য একটি অভয়ারণ্য ঘোষিত হয়।  এই বনাঞ্চলে অনেক অর্থকরী গাছ রোপণ করা হয়েছে এবং কৃষ্ণমৃগ, চিতল হরিণ, শিয়াল, খ্যাঁকশিয়াল ও নানা ধরনের জলচর পাখি এখানে বাস করে।
সাক্ষরতা ও শিক্ষাব্যবস্থা 
২০০১ সালের জনগণনা তথ্য অনুসারে, বীরভূম জেলার সাক্ষরতার হার ৬২.১৬ শতাংশ; পুরুষ সাক্ষরতা ৭১.৫৭ শতাংশ ও মহিলা সাক্ষরতা ৫২.২১ শতাংশ। ১৯৫১ সালে এই জেলায় সাক্ষরতার হার ছিল ১৭.৭৪ শতাংশ। ১৯৯১ সালে তা বেড়ে হয়েছিল ৪৮.৫৬ শতাংশ।
বর্তমানে ২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী জেলার ব্লক ভিত্তিক সাক্ষরতার হার দেওয়া হল-
মুরারই ১-৫৫.৬৭ শতাংশ,মুরারই ২- ৫৮.২৮শতাংশ, নলহাটি ১-৭৫.৪৮শতাংশ, নলহাটি ২-৭১.৬৭শতাংশ,রামপুরহাট ১-৭৩.২৯শতাংশ, রামপুরহাট ২-৭০.৭৭শতাংশ, ময়ূরেশ্বর ১-৭১.৫২শতাংশ, ময়ূরেশ্বর ২-৭০.৮৯শতাংশ, মহম্মদবাজার-৬৫.১৮শতাংশ, রাজনগর-৬৮.১০শতাংশ, সিউড়ী ১-৭২.৬৯শতাংশ, সিউড়ী ২-৭২.৭৫শতাংশ,সাঁইথিয়া-৭২.৩২শতাংশ, লাভপুর-৭১.২০শতাংশ, নানুর-৬৯.৪৫শতাংশ,বোলপুর-শ্রীনিকেতন-৭০.৬৭শতাংশ, ইলামবাজার-৭৪.২৭শতাংশ,দুবরাজপুর-৬৮.২৬শতাংশ,খয়রাশোল-৬৮.৭৫শতাংশ।
বীরভূম জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা যা পাশের টেবিলে দেওয়া আছে তার কিছু বর্তমান সংখ্যা দেওয়া হল
উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়- ১৯৮(এর মধ্যে মাদ্রাসা ১৩), মাধ্যমিক বিদ্যালয়-১৮১( এর মধ্যে মাদ্রাসা ১৩), নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১৬(এর মধ্যে মাদ্রাসা ৫), মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র- ৯৯, প্রাথমিক বিদ্যালয়( জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ পরিচালিত)-২৩৯৭,রেল দপ্তর পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়- ১, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র- ৬৫০, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র( পৌর দপ্তর পরিচালিত)- ৩১, মহাবিদ্যালয়- ১৭।
নিরক্ষরতা দূরীকরণের ক্ষেত্রে বিংশ শতাব্দীর সর্বশেষ দশকে সাক্ষরতার হারের এই বৃদ্ধি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যদিও মনে করা হচ্ছে এই জেলা ২০১০ সালের মধ্যে ৬-১৪ বছর বয়স্ক সব শিশুদের স্কুলে পাঠানোর জাতীয় কর্মসূচি সাফল্যের সঙ্গে সম্পাদন করতে পারবে না; তবুও যথাসাধ্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জেলায় মোট ১২৩টি সরকার-পোষিত গ্রন্থাগার আছে। এর মধ্যে ১টি জেলা গ্রন্থাগার, ১০টি শহর বা মহকুমা গ্রন্থাগার এবং ১১২টি গ্রামীণ বা প্রাথমিক স্তরের গ্রন্থাগার।[৪৬] সিউড়ির শিবরতন মিত্রের 'রতন লাইব্রেরি' নামে একটি ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার একসময় খুবই সুখ্যাত ছিল।
খেলাধূলা 
একসময় গ্রামীণ বীরভূমের সবচেয়ে জনপ্রিয় আউটডোর খেলা ছিল ডাঙ্গুলি।  বর্তমানে এই খেলার জনপ্রিয়তা কিছুটা হলেও দখল করে নিয়েছে ক্রিকেট। এছাড়া গুলি খেলা এই জেলার ছেলেমেয়েদের মধ্যে এখনও জনপ্রিয়; এটি ইন্ডোর ও আউটডোর দুইভাবেই খেলা যায়। ক্রিকেটের সঙ্গে ফুটবল ও কবাডিও এই জেলায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।


Post a Comment

Previous Post Next Post