নিউট্রিনো সম্বন্ধে জানুন

জিকে পোস্ট - ২৪৯ 

নিউট্রিনো - ব্রহ্মান্ডের এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার সম্বন্ধে নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হল । জেনে নিন -
প্রথমে জানুন নিউট্রিনো কি ? 
নিউট্রিনো - হচ্ছে বৈদ্যুতিক চার্জবিহীন, দুর্বল সক্রিয় ক্ষুদ্র পারমাণবিক কণা। ধারণা করা হয়, এই ক্ষুদ্র কণা অশূন্য ভরের কণা। পর্দাথের মধ্য দিয়ে এই কণা প্রায় অবিকৃতভাবে চলাচল করতে পারে। নিউট্রিনো অর্থ হচ্ছে 'ক্ষুদ্র নিরপেক্ষ কণা'। গ্রীক বর্ণ নিউ দিয়ে একে প্রকাশ করা হয়।
কবে আবিস্কার হয় ? 
২০শে জুলাই ১৯৫৬ সালে বিজ্ঞানী Clyde Cowan, Frederick Reines, F. B. Harrison, H. W. Kruse, ও A. D. McGuire সায়েন্স ম্যাগাজিনে একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে জানান যে তারা নিউট্রিনো নামের নতুন কণার অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন । প্রায় ৪০ বছর পর ১৯৯৫ সালে তাঁদের এই আবিস্কারের স্বীকৃতি দিয়ে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ।
সেপ্টেম্বর ২০১১-তে গবেষকরা ঘোষণা করেন, নিউট্রিনো আলোক কণা থেকে দ্রুত বেগসম্পন্ন। নিউট্রিনো যদিও ভরহীন হয়, তাহলে আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনুযায়ী তার গতি হবে আলোর গতির সমান, আর যদি ভর থাকে, তাহলে গতি হবে আলোর গতির চেয়ে কম। কিন্তু অপেরা পরীক্ষণের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে নিউট্রিনোর গতি হলো আলোর গতির ১.০০০০২৫ গুণ (০.০০২৫ শতাংশ বেশি)।  পরবর্তীতে এই ফলাফল ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
সম্প্রতী কি আবিস্কার হয়েছে ? 
ইলেকট্রনের ভরের ৫ লক্ষ ভাগের মাত্র ১ ভাগ শেষমেশ আস্ত একটা কণাকে নাড়িয়ে দিল । ভারতে নিউট্রিনো গবেষণার পথিকৃৎ বিজ্ঞানী , কোলকাতার সাহা ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিসিক্সের - রাজা রাজা রামান্না ডিস্টিঙ্গুইস্টিক ফেলো অধ্যাপক নবকুমার মন্ডল জানান - ' এই কণাটি নিজের মত করে চলে , স্ট্রং ফোর্স বা শক্তিশালী বল তো দূরের কথা , তড়িৎ চুম্বকীয় বল বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফোর্সের সঙ্গেও কখনও কোনো মিল নেই এই কণাদের । এই তথ্য জানার পর অনেক সম্ভাবনার দরজা খুলে গেলো -
১। এর ফলে কোন কোন কণাগুলি ডার্ক ম্যাটার তার অনুসন্ধান করা সহজ হবে ।
২। নক্ষত্রদের মৃত্যুর পর যে বিস্ফোরণ হয় , সেই সুপারনোভা থেকে বেড়িয়ে আসা নিউট্রিনোদের সন্ধান পাওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কিছুটা সুবিধা হবে ।
৩। পৃথিবীর কোথায় কোথায় অস্ত্র বানানোর লক্ষ্যে পরমাণু চুক্তি বা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর গোপনে বানানো হচ্ছে বা চালু রয়েছে তার সন্ধান জানার উপায় বাতলে দিতে পারে এই আবিস্কার ।
লো এনার্জির নিউট্রিনোদের নিয়ে গবেষণা ভারতবর্ষে এই প্রথম ।
নিউট্রিনোর দ্বিতীয়বার নোবেল জয় 
২০১৫ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার যায় নিউট্রিনো গবেষণার খাতে। বিজয়ী বিজ্ঞানীরা হলেন, জাপানের তাকাআকি কাজিতা ও কানাডার আর্থর বি. ম্যাকডোনাল্ড। নিউট্রিনো সম্পর্কে বিদ্যমান রহস্যের সমাধানের জন্য তাঁদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয় বলে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়েছে। কাজিতা ও ম্যাকডোনাল্ডের নোবেল পাওয়ার বিষয়ে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিউট্রিনোর ভর নির্ণয়ে তাঁদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। পদার্থের অধিকতম অন্তর্নিহিত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের ধারণা এ আবিষ্কার পরিবর্তন করে দিয়েছে। এ আবিষ্কারে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ইতিহাস, গঠন ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণার পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলেও জুরি বোর্ড আশা প্রকাশ করেছে।


Post a Comment

Previous Post Next Post